জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৯ ব্যক্তি ও ২ প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পদক-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানে পদক তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি উপস্থিত ছিলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘যাঁরা মানুষের কল্যাণে ও দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন, হয়তোবা তাঁরা প্রচারে আসেন না, দৃষ্টিসীমার বাইরে থাকেন। তাঁদের খুঁজে বের করে পুরস্কৃত করা উচিত। তাঁদের দেখে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও অন্যরাও শিখবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের সেবা ও কল্যাণের মাধ্যমে যে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়। হাজার ধন-সম্পদ বানালেও সেটা হয় না, সেটা আসে না। তাই সেভাবেই আমাদের উদ্যোগ নিতে হবে। খুঁজে বের করতে হবে কারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা দিচ্ছেন, কাজ করছেন।
আমন্ত্রিত অতিথিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক বক্তব্য রাখলাম, কিছু মনে করবেন না। বহুদিন পরে মুক্তি পেলাম তো। আসলেই করোনাভাইরাসের সময় তো একেবারেই বন্দিখানায় ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা পুরস্কার একবার দিতে পারিনি। কিন্তু বারবার তো আমি নিজেকে বঞ্চিত করতে পারি না। স্বাধীনতা পুরস্কার নিজ হাতে তুলে দেওয়া আমার জন্য সম্মানের। তাই বহুদিন পরে এই অফিসে আসার সুযোগ পেলাম।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে জাতি নিজের মায়ের ভাষা ও স্বাধীনতার জন্য বুকের রক্ত দেয়। সেই জাতিকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারে না। যেটা জাতির পিতা তাঁর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বলেছিলেন। আমিও তাই বিশ্বাস করি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘যে স্বাধীনতা আমরা অর্জন করেছি। তা ধরে রেখে, এর সুফল আমরা প্রত্যেক ঘরে ঘরে পৌঁছাব। এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমরা সেটা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে আজকে আমরা উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছি। এই যাত্রা যাতে অব্যাহত থাকে। সব প্রজন্মের কাছে সেই অনুরোধ থাকবে।’
‘স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ’ ক্ষেত্রে এবার বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা (বীরবিক্রম), আব্দুল জলিল, সিরাজ উদদীন আহমেদ, মরহুম মোহাম্মদ ছহিউদ্দিন বিশ্বাস এবং মরহুম সিরাজুল হক স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন।
‘চিকিৎসাবিদ্যা’ শ্রেণিতে অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া ও অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল ইসলাম; ‘স্থাপত্যে’ মরহুম স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেনকে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গবেষণা ও প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটকে এবারের স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়। দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন নিশ্চিত করায় স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ।
স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতিবছর এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে ৫ লাখ টাকা, আঠারো ক্যারেট মানের ৫০ গ্রাম স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা এবং একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হবে।
Discussion about this post