নিজস্ব প্রতিবেদক:- চাঁদপুরের সিভিল সার্জন অফিসে মো. সেলিম নামের এক ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী (মূল পদ: অডিও ভিজ্যুয়াল হেলপার) নিয়োগ বিধি পরিপন্থীভাবে প্রায় ১৫ বছর ধরে অফিস সহকারী পদে দায়িত্ব পালন করছেন। অভিযোগ রয়েছে, প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তিনি অবৈধ ক্ষমতার চর্চা করে চাঁদপুর স্বাস্থ্য বিভাগে একটি দুর্নীতির বলয় গড়ে তুলেছেন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে বদলি বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার দুর্নীতি থেকে শুরু করে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর লাইসেন্স প্রদান এবং নবায়নের ক্ষেত্রে মো. সেলিমের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ।
স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মচারীরা প্রায়ই তার বদলির হুমকিতে আতঙ্কিত থাকেন। অভিযোগ রয়েছে, এসব কাজে তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেন সিভিল সার্জন অফিসের পিয়ুষ এবং হিসাবরক্ষক ইলিয়াস।
মো. সেলিমের আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একটি পাঁচতলা বাড়ি (উম্মে ভিলা, হোল্ডিং নং-৫৯৯, প্রফেসর পাড়া), নাজির পাড়ায় আরেকটি পাঁচতলা বাড়ি (ফারুক কবিরাজ চেম্বারের পাশে), একটি প্রাইভেট গাড়ি, এবং আজাদ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অংশীদারিত্ব—এসবই তার নামে রয়েছে। এক সময়ের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে এত সম্পদ অর্জন কীভাবে সম্ভব, তা নিয়ে জোর আলোচনা চলছে সর্বত্র।
বিভিন্ন সিভিল সার্জন এবং মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা তার অবৈধ কার্যক্রমের সামনে অসহায় ছিলেন। মো. সেলিম তার একক কর্তৃত্ব বজায় রাখতে সিভিল সার্জন কার্যালয়ে তার পছন্দের লোক ছাড়া কাউকে পদায়ন করতে দেননি।
চাঁদপুর স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পান। স্বজনপ্রীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং দুর্নীতির কারণে পুরো বিভাগে কাজের পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরকারের উর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। মো. সেলিমের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছেন তারা।
চাঁদপুরের স্বাস্থ্য বিভাগে এমন দুর্নীতির বলয় এবং ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ে তদন্ত শুরু হলে কী কী চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসবে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
Discussion about this post