আমাদের দেশে রাজনৈতিক সহিংসতা এক দুঃখজনক ও নিন্দনীয় বিষয়। সমাজে সহনশীলতা, শৃঙ্খলা, এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব রয়েছে। রাজনীতি যখন সহিংস হয়ে ওঠে, তখন তা শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায়ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সাম্প্রতিক বহু ঘটনা থেকে আমরা এরকম অসংখ্য উদাহরণ টানতে পারি।
রাজনৈতিক সহিংসতা সমাজে ভয় ও বিভ্রান্তি ছড়ায় একথা স্পষ্ট বলা যায়। এতে অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকে, এবং মানুষ তাদের মৌলিক অধিকারগুলো থেকেও বঞ্চিত হয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখতে হবে, ৫ আগস্টের গন বিপ্লবের পর আমরা চাই ভবিষ্যতে এমন ঘটনা আর না ঘটুক। যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে ১৮ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলো, স্বৈরাচারের পতন হয়েছিলো, আর আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছিলাম এটির মর্যাদা শতভাগ ধরে রাখতে হবে।
সকল রাজনৈতিক দলের উচিত তাদের কর্মী ও সমর্থকদের সহনশীলতা ও আইন-শৃঙ্খলা মেনে চলার শিক্ষা দেওয়া। কোনো দলই যেন নিজেদের স্বার্থে সহিংসতার পথ বেছে না নেয়। বরং, জনগণের চাহিদা ও প্রত্যাশাকে গুরুত্ব দিয়ে, রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় তাদেরকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ও গণতান্ত্রিক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব বলে মনে করি।
আমাদের তরুণ প্রজন্মের উচিত রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং সহিংসতার বিপরীতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও প্রতিবাদকে প্রাধান্য দেওয়া। দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে হলে, আমাদের সবারই দায়িত্ব আছে। আসুন, ঐক্যবদ্ধতার মাধ্যমে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, এবং মানবিক সমাজ গড়ে তুলি।
এই পরিবর্তনের প্রথম ধাপ হতে পারে আমাদের নিজেদের মধ্যে প্রতিজ্ঞা করা, যে আমরা সহিংসতাকে কখনোই সমর্থন করব না এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি আস্থাশীল থাকব। রাজনীতি আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ, এবং এটি সমাজে পরিবর্তনের শক্তিশালী হাতিয়ার। তাই, রাজনীতিকে রক্ষা করার দায়িত্বও আমাদেরই।
Discussion about this post