করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে বিধিনিষেধ ও বাধ্যতামূলক টিকার বিরোধিতা করে এবার নিউজিল্যান্ডেও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার ওয়েলিংটনে পার্লামেন্ট ভবনের পার্শ্ববর্তী রাস্তায় বিক্ষোভ করেন হাজারো মানুষ। করোনার বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে কানাডায় ট্রাকচালকদের চলমান বিক্ষোভের আদলে ওয়েলিংটনেও শত শত ট্রাক ও গাড়ি দিয়ে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ চলে। খবর এএফপির
নিউজিল্যান্ডে স্বাস্থ্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, শিক্ষা, প্রতিরক্ষাসহ সুনির্দিষ্ট কিছু খাতে কাজ করা মানুষদের জন্য করোনা টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক। দেশটিতে পাস ব্যবস্থাও চালু আছে। রেস্তোরাঁ, ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে প্রবেশের ক্ষেত্রে জনগণকে টিকা গ্রহণের প্রমাণ দেখাতে হবে। তবে গণপরিবহন, সুপারমার্কেট, স্কুল ও স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে এ বিধিনিষেধ প্রযোজ্য নয়।বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার এসব বিধিনিষেধের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে রাস্তায় নামেন হাজারো মানুষ। ‘গিভ আস ব্যাক আওয়ার ফ্রিডম (আমাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিন)’, ‘কোয়ারশন ইজ নট কনসেন্ট (বাধ্যতা মানেই সম্মতি নয়)’—এসব স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। শত শত ট্রাক ও গাড়ি দিয়ে পার্লামেন্টের আশপাশের রাস্তা আটকে দেন বিক্ষোভকারীরা।
ওয়েলিংটনের বাসিন্দা স্টু মেইন বলেন, বিক্ষোভকারীরা মনে করেন তাঁদের অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে আর এ ব্যাপারে সরকার কর্ণপাত করছে না।
এএফপিকে স্টু মেইন বলেন, ‘আমি আসলে টিকা নিয়েছি। তবে মানুষকে টিকা নিতে বাধ্য করার বিপক্ষে অবস্থান আমার। যেসব মানুষ টিকা নিতে চান না, তাঁদের টিকা নিতে বাধ্য করার বিষয়টি আমার কাছে অমর্যাদাকর।’
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল। পুলিশ জানিয়েছে, এদিন কোনো বড় ধরনের ঘটনা ঘটেনি। কেউ গ্রেপ্তারও হননি।
নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নেওয়ার ইচ্ছা তাঁর নেই। জাসিন্ডার দাবি, নিউজিল্যান্ডের বেশির ভাগ মানুষই সরকারের টিকা কার্যক্রমের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
রেডিও নিউজিল্যান্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জাসিন্ডা আরডার্ন বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের জনগণের ৯৬ শতাংশ মানুষই টিকা নিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে আমরা অল্প কিছু বিধিনিষেধ জারি করেই চালিয়ে যেতে পারছি। কারণ, টিকা থেকে বাড়তি সুরক্ষা মিলছে।’
করোনাবিধির বিরোধিতা করে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কানাডার রাজধানী অটোয়াতে ‘ফ্রিডম কনভয়’ নামের বিক্ষোভ করছেন সীমান্ত এলাকার ট্রাকচালকেরা। সপ্তাহব্যাপী এই বিক্ষোভে অটোয়ার জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় রোববার অটোয়ায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন শহরের মেয়র জিম ওয়াটসন।
ওয়েলিংটনে আজ শুরু হওয়া বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী বিলি নামের এক প্রবাসীসহ বেশ কয়েকজনের হাতে কানাডার পতাকা দেখা গেছে। এএফপিকে বিলি বলেন, ‘আমি শুধু কানাডীয় ভাইদের প্রতি সংহতি জানাতে এসেছি। নিজেদের স্বাধীনতার জন্য তাঁরা যে লড়াই চালাচ্ছেন, তাঁর প্রতি সমর্থন জানাচ্ছি।’
ওয়েলিংটনে কত সময় ধরে বিক্ষোভ চলবে, সে ব্যাপারে আয়োজকেরা সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি।
Discussion about this post