একদিকে পদ্মা, অন্যদিকে যমুনা। মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে ইছামতী। এই নদীর দুই তীরজুড়ে গড়ে ওঠা প্রাচীন জনপদ পাবনা। প্রবীণ ব্যক্তিদের মতে, এ শহরের বাসিন্দারা খুব আন্তরিক-সংস্কৃতিমনা। ধর্মীয় সম্প্রীতি আছে মানুষে মানুষে। একসময় পাড়ায় পাড়ায় খেলাধুলা ও সংস্কৃতির চর্চা হতো। বাড়িতে বাড়িতে ছিল ফুলের বাগান। তাই হয়তো এ ভূমির সন্তান কবি বন্দে আলী মিয়া ‘আমাদের গ্রাম’ কবিতায় লিখেছিলেন—
‘আমাদের ছোট গাঁয়ে ছোট ছোট ঘর,
থাকি সেথা সবে মিলে নাহি কেহ পর।
পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই,
এক সাথে খেলি আর পাঠশালে যাই।’
প্রবীণ ব্যক্তিরা বলছেন, কবির দেখা ছোট গ্রাম এখন আর ছোট নেই, হয়েছে বড় শহর। হোসিয়ারি শিল্পখ্যাত শহরটি পরিণত হয়েছে শিক্ষানগরে। তবে কবির দেখা, ‘মাঠ ভরা ধান তার জল ভরা দীঘি’ আর নেই। ষাটের দশকে যে শহরে মাত্র একটি চারতলা ভবন ছিল, সে শহর এখন শত শত ভবনে ছেয়ে গেছে। শহরে ৬ থেকে ১৫ তলা ভবনই আছে ২ শতাধিক। পুকুরগুলো ভরাট করে তৈরি করা হয়েছে বাড়ি। খেলার মাঠ ফুঁড়ে দাঁড়িয়েছে বিশালকায় সব ইমারত। দখল-দূষণে মরা খালে পরিণত হয়েছে ইছামতী। একটু বৃষ্টিতেই
হচ্ছে জলাবদ্ধতা। নেই কোনো পার্ক। প্রতিদিন যানজটে নাকাল শহরবাসী। এরপরও এ শহরে শান্তির পরশ আছে বলে মনে করেন স্থানীয় লোকজন।
Discussion about this post