মুফতি খালিদ কাসেমি
মহানবী (সা.) প্রতিবেশীদের খুব সম্মান করতেন। সর্বদা তিনি প্রতিবেশীর হক আদায়ে সজাগ থাকতেন। প্রতিবেশীদের সঙ্গে মহানবী (সা.)-এর আচরণ ছিল অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ ও সহনশীল। মহানবী (সা.) বলেন, ‘আমাকে জিবরাইল (আ.) সব সময় প্রতিবেশীর ব্যাপারে উপদেশ দেন। এমনকি, আমার ধারণা হয়, শিগগিরই তিনি প্রতিবেশীকে উত্তরাধিকারী বানিয়ে দেবেন।’ (বুখারি)
প্রতিবেশীদের সম্মান করাকে মহানবী (সা.) ইমানের আলামত হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের ওপর বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে।’ (বুখারি) অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তির অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (মুসলিম)
প্রতিবেশীদের মধ্যে পারস্পরিক উপহার বিনিময়ে উৎসাহিত করেছেন মহানবী (সা.)। তিনি বলেন, ‘হে মুসলিম নারীগণ, কোনো মহিলা প্রতিবেশী যেন অপর মহিলা প্রতিবেশীর হাদিয়া তুচ্ছ মনে না করে, এমনকি তা ছাগলের সামান্য খুর হলেও।’ (বুখারি)
মহানবী (সা.) খাবার বিনিময়ের মাধ্যমে প্রতিবেশীদের খেয়াল রাখতে বলেছেন। আবুজর (রা.) বলেন, ‘আমার বন্ধু রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে উপদেশ দিয়েছেন, যখন তুমি তরকারি রান্না করবে, তখন তাতে বেশি করে ঝোল দেবে। তারপর তোমার প্রতিবেশীর পরিজনের খেয়াল রাখবে। এরপর তা থেকে তাদের কিছু সৌজন্য হিসেবে পৌঁছে দেবে।’ (মুসলিম)
কোনো ব্যক্তির ভালো কিংবা মন্দ হওয়ার অন্যতম মাপকাঠি প্রতিবেশীদের সাক্ষ্য। হাদিসে এসেছে, ‘এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলল, ‘আমি কখন ভালো কাজ করি এবং কখন মন্দ কাজ করি—তা কীভাবে বুঝব?’ তিনি বললেন, ‘যখন তোমার প্রতিবেশীদের বলতে শুনবে যে তুমি ভালো কাজ করেছ, তবেই তুমি ভালো কাজ করেছ। আর যখন তোমার প্রতিবেশীদের বলতে শুনবে যে তুমি মন্দ কাজ করেছ, তবে তুমি মন্দ কাজই করেছ।’ (ইবনে মাজাহ)
Discussion about this post