নুর ইসলাম নিরব
স্টাফ রিপোর্টার
চাঁদপুরের মেঘনা নদীর ঈশানবালায় নিরাপত্তাজনিত ঘাটতিতে মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের আল বাখারা নামক জাহাজে চালকসহ সাতজনকে কুপিয়ে নির্মমভাবে খুন করা হয়েছে।
ঘটনার আরও কোনো রহস্য থাকলে তা উন্মোচনের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। চিকিৎসক জানিয়েছে সাতজন ছাড়াও আশঙ্কাজনকভাবে একজনকে ঢাকা পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনের লোকজন বলছে নিরাপত্তা জোরদারসহ দ্রুত ঘটনার রহস্য উন্মোচনা করা হবে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে জাহাজে ডাকাতির ঘটনায় নিহতের সত্যতা নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। নৌপুলিশ জানায়, চট্টগ্রামের কাপ্পো জেটি থেকে সারবোঝাই মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের আল বাখারা নামক জাহাজ সিরাজগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়।
পরে চাঁদপুরের ঈশানবালা ও মাঝের চর এলাকার মাঝামাঝি মেঘনা নদীতে জাহাজটি নোঙর করা দেখে অন্য জাহাজের লোকজন এগিয়ে আসে। পরে পাঁচজনের রক্তাক্ত অবস্থা দেখে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে প্রশাসন পৌঁছলে সেখানে পাঁচজনকে মৃত অবস্থায় দেখেন। এরপর জাহাজটির বিভিন্ন ডেকে আরও তিনজনকে রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় পেয়ে হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং একজনকে ঢাকা প্রেরণ করেন।
এ বিষয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার আনিসুর রহমান বাংলাদেশ নিউজকে বলেন, যে তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে, তার মধ্যে দুজনকে মৃত পাই। মৃত দুজনের মাথায় ও শরীরের ধারালো অস্ত্রের কোপ ছিল।
এ ছাড়া যাকে ঢাকায় পাঠিয়েছি তার গলায় জবাই দেওয়ার চিহ্ন ছিল। এদিকে এমন লোমহর্ষক ঘটনা দেখে বিস্মিত চাঁদপুরবাসী। তারা এ ঘটনার রহস্য উন্মোচনসহ দ্রুত জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় বলেন, বেশ কিছু তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত রহস্য উন্মোচিত সম্ভব হবে বলে আমরা আশাবাদী।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, প্রতিনিয়ত মেঘনা নদীর ওই নৌরুটে কোটি কোটি টাকার পণ্য জাহাজে করে আনা নেওয়া হয়। এই নৌ পথে এমন ঘটনায় নিরাপত্তা ঘাটতি ছিল এবং তা জোরদার করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
দ্রুত এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু হয়েছে। চাঁদপুর নৌ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত ঘটনায় নিহতদের মধ্যে জাহাজটির মাস্টার কিবরিয়া, ড্রাইভার সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সী, গ্রিজার সজিবুল ইসলাম, গ্রিজার আজিজুল, লস্কর মাজেদুলের নাম জানিয়েছে পুলিশ।
এ ছাড়া ঢাকায় পাঠানো আহত লোকটি ছিল জাহাজটির সুকানি মো. জুয়েল। এরা প্রত্যেকেই ফরিদপুর, শেরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা বলে পুলিশ সূত্র জানায়।
Discussion about this post