রাকিব হোসেন মিলন
বিশেষ প্রতিনিধি
শরীয়তপুরে পুলিশের পরিদর্শক অবনী শংকর কর ও উপপরিদর্শক হায়দার আলীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করা হয়েছে।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাকিব হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) তদন্তের নিদের্শ দিয়েছেন।শরীয়তপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে মামলাটি করেন নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান।
অবনী শংকর ও হায়দার আলী নড়িয়া থানায় কর্মরত ছিলেন। এ ছাড়া নড়িয়ার সুরেশ্বর এলাকার সুজন খান ও ফারুক খানকে আসামি করা হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মতিউর রহমান উপজেলার চরলাউলানি এলাকার বাসিন্দা। তিনি জনশক্তি রপ্তানি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ২০২১ সালে স্থানীয় ঘড়িসার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে মতিউর রহমান প্রতিদ্বন্দিতা করেন। নির্বাচন নিয়ে অপর প্রতিদ্বন্দ্বী সঙ্গে তার বিরোধ হয়।
সেই সূত্র ধরে ওই বছর ২১ সেপ্টেম্বর মতিউর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমানকে এক লাখ টাকাসহ আটক করে নড়িয়া থানায় নিয়ে যায় ফারুক খানসহ কয়েক ব্যক্তি। ওই ঘটনায় তখন ফারুক খান নড়িয়া থানায় বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেন। ওই মামলায় মিজানুর বেশ কিছু দিন কারাবরণ করেন।
বুধবার চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক আটকে রাখা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে একটি মামলার আবেদন করেন মতিউর রহমান। ২০২১ সালে নড়িয়া থানায় কর্মরত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনী শংকর ও উপপরিদর্শক হায়দার আলী, ফারুক খান ও মামলার এক সাক্ষী সুজন খানকে আসামি করেন তিনি।
ওই আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাকিব হোসেন রবিবার মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। মতিউর রহমান বাংলাদেশ নিউজকে বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আমাকে নানাভাবে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় হয়রানি করেছিল। সেই সঙ্গে আমার ছেলেকে জিম্মি করে আটকে রাখেন আসামিরা।
৯৯৯ ফোন করে সহযোগিতা নিলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ তখন এক আওয়ামী লীগের নেতার নির্দেশের উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মানবপাচারের মামলা দেয়। ওই মামলা থেকে নিষ্কৃতি দেওয়ার কথা বলে অবনী শংকর কর ও তদন্ত কর্মকর্তা হায়দার আলী আমার কাছ থেকে ৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। তখন আমার কিছু করার ছিল না। তাই এখন আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।’হায়দার আলীর মুঠোফোনে একাধিক ফোন করলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।অবনী শংকর কর মুঠোফোন বাংলাদেশ নিউজকে বলেন, ‘এক ভুক্তভোগী ২০২১ সালে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে একটি মানবপাচার মামলা করেছিল।
ওই মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছি। মতিউর রহমান তখন ওই অভিযোগপত্র না দেওয়ার জন্য আমাদের নানাভাবে প্রভাবিত করে ব্যর্থ হয়েছিল। তাই তিনি এখন ক্ষুব্ধ হয়ে মামলা করেছেন।শরীয়তপুর আদালতের পরিদর্শক শিমুল বাংলাদেশ নিউজকে বলেন, দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি মামলা করেছেন।
আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা পিবিআই গোপালগঞ্জ কার্যালয়ে ওই আদেশের কপি পাঠিয়ে দেব। এখন মামলা কিভাবে চলবে, তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর আদালত সিদ্ধান্ত নেবে।
Discussion about this post