বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক
লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের মুক্তিগঞ্জ এলাকায় আজ ভোরে গ্রীনলীফ ফিলিং স্টেশনে বাসে গ্যাস নেয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আবুল কালাম (২২) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এসময় আবুল হোসেন(৫৫), নাইম উদ্দিন(২৪) ও হোসেন আহমেদ(৩৮) নামে আরো তিনজন গুরুতর আহত হন।
মৃত শ্রমিক আবুল কালাম পৌরসভার সাহাপুর এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে। সে পাম্পের পাশে একটি ওয়ার্কসপে কাজ করতেন।
আহত তিনজনের মধ্যে একজন পাম্পের শ্রমিক ও অপর দুইজন সিএনজির চালক বলে জানিয়েছেন পাম্পের ম্যানেজার মো.আল আমিন।
ফিলিং স্টেশন,ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার ভোর পৌনে চারটার দিকে আল মদিনা পরিবহন নামে একটি বাস গ্যাস নিতে আসে গ্রীনলাইফ ফিলিং স্টেশনে। এসময় বাসে গ্যাস দেয়ার সময় হঠাৎ বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। এতে চারদিক ধুয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেলে স্টেশনে থাকা সিএনজি চালকরা ছুটাছুটি করে।
এসময় ঘটনাস্থলে মারা যায় ওয়ার্কসপ শ্রমিক আবুল কালাম। আহত হয় আরো ৩জন। লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রানজিত কুমার জানান,দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহত শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় গুরুতর আহত তিনজনকে ঢাকা ও নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদের মধ্যে নাইম ও আবুল হোসেনের অবস্থায় আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়নাল আবেদিন। চালকরা জানায়, দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে গ্যাস নিচ্ছিলেন সিএনজির চালকরা। হঠাৎ আল মদিনা পরিবহন নামে একটি বাস ফিলিং স্টেশনে এসে লাইনে না দাঁড়িয়ে সরাসরি গ্যাস নিতে চলে যায়।
এসময় পাম্পের অপারেটর বাসের গ্যাস সিলিন্ডার গ্যাস দেয় শুরু করে। এক পর্যায়ে গ্যাস সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এর কিছু দিন আগে এ পাম্পে বাসে গ্যাস নিতে গিয়ে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মারা যায় তিনজন এবং ২০জন আহত হয়।
তবে বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি মেয়াদ উত্তীর্ণ ও নিম্মমানের হওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারনা করা হচ্ছে। লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজিব কুমার সরকার বলেন, সড়কে যেন ফিটনেসবিহীন কোন পরিবহন চলাচল করতে না পারে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি নিম্মমান ও মেয়াদ উত্তীর্ণ ছিল বলে ধারনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ অক্টোবর রাতে এ গ্যাস পাম্পে মেঘনা পরিবহন নামে একটি বাসে গ্যাস নেয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে সদর উপজেলার চরমনসার বটুমিয়ার ছেলে সুমন হোসেন , বাঞ্চানগর এলাকার সুজামিয়ার ছেলে মো. ইউসুফ মিয়া ও হৃদয় হোসেনসহ তিনজন মারা যায় । এসময় আহত হয় ২০জন। এ নিয়ে গত দুই মাসে এ গ্যাস পাম্পে দুইটি দুর্ঘটনা ঘটে।
Discussion about this post