আরিফুর রহমান
এমপক্স একটি ভাইরাসজনিত রোগ। যা প্রনী থেকে মানুষের দেহে, প্রানী থেকে প্রানীতে ছড়ায়।এই রোগের বাহক, বানর,খরগোস,বিড়াল,ইদুর,কুকুর ইত্যাদি স্তন্যপায়ী প্রানী। বাংলাদেশে জলবসন্ত দেখা যায়, একসময় গুটিবসন্ত ছিল। এমপক্স আলাদা ধরনের একটি পক্স ভাইরাস। এমপক্সের প্রধান দুইটি ধরন আছে ক্লেড ১ এবং ক্লেড ২। দুইটি ধরনের মধ্যে আবার সাব ডিভিশন এ, বি রয়েছে।
কঙ্গোতে দীর্ঘদিন এমপক্স প্রাদুর্ভাবের কারণ ছিল ক্লেড ১ ভাইরাস আর ইউরোপে ছড়িয়েছে ক্লেড ২ ভাইরাস। ক্লেড ২ ভাইরাসে মৃত্যুহার কম। কিন্তু আফ্রিকায় যেটা ছড়িয়েছিল ক্লেড ১, সেটার মৃত্যুহার বেশি। ক্লেড ১ ধরনটি গুরুতর। এর মৃত্যুহার ১০০ জনের মধ্যে ৪ জন।
এই ভাইরাসগুলো আগে থেকেই ছিল, মাঝখানে কমে গিয়েছিল। সম্প্রতি আবার বাড়তে শুরু করেছে এমপক্স ভাইরাস সংক্রমণ। আফ্রিকার কঙ্গোতেই আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আশপাশের দেশে ছড়িয়েছে এবং ইউরোপ ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশেও ছড়াচ্ছে। সংক্রমণ মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ২০২২ সালের পর মাঙ্কিপক্স বা এমপক্স নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
কীভাবে ছড়ায়:
এমপক্স ভাইরাসের উদ্ভব বন্যপ্রাণী থেকে। বর্তমানে এমপক্স ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে ছড়াচ্ছে। এজন্য ঝুঁকি বেড়ে গেছে।
এমপক্স ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে ছড়াচ্ছে শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমে।
সংক্রমিত ব্যক্তির শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
এমপক্স আক্রান্ত বন্যপ্রাণী শিকার করা, চামড়া তোলা, মাংস কাটা এমনকি রান্নার সময়, কম তাপে রান্না করা খাবার খেলে সেখান থেকে ভাইরাস ছড়াতে পারে।
সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহার করা পোশাক, তোয়ালে, বিছানার চাদর, যেকোনো ব্যবহার্য জিনিসপত্র ব্যবহার করলে
সংক্রমিত ব্যক্তির ব্যবহার করা ইনজেকশনের সুঁই অন্য কারো শরীরে প্রবেশ করালেও এমপক্স হতে পারে।
সন্তানসম্ভবা নারী এমপক্স আক্রান্ত হলে অনাগত সন্তানও এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।
এমপক্স শুকিয়ে যাওয়ার পর ফোসকার আবরণ যদি বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে, সেখান থেকে ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে।
এমপক্স রোগের চিকিৎসা:
অধিকাংশ ক্ষেত্রে লক্ষণ দেখা দেওয়ার ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে সংক্রমণের প্রভাব ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হতে শুরু করে। এর মধ্যে রোগের ক্ষতিকর দিকগুলো থেকে রক্ষা পেতে সুনির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। তবে এমপক্সের গুরুতর অবস্থায় বেশ ভালো কাজ দেওয়ায় প্রতিষেধক হিসেবে টেকোভিরিমাট ও সিডোফোভির প্রেস্ক্রাইব করা হয়। এছাড়া প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভ্যাক্সিনিয়া ইমিউন গ্লোবুলিন দেওয়া হতে পারে। মূলত গুটিবসন্তের মতো অন্যান্য ভাইরাসজনিত সংক্রমণের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এই ওষুধের ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে।
Discussion about this post