আবদুল আযীয কাসেমি
মানুষের জীবনের প্রতিটি ধাপই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যৌবন, কিংবা বার্ধক্য বা প্রৌঢ়ত্ব—কোনো ধাপই গুরুত্বহীন নয়। তবে সন্দেহ নেই, এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো যৌবনকাল। এটা মানুষের জীবনের সেরা সময়। এ সময়ের মধ্যেই সে তার জীবনের সেরা কাজগুলো করতে সক্ষম হয়। এ সময়টিকে ইসলাম অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেছে। আল্লাহর কাছে যৌবনের ইবাদত যেভাবে মূল্যায়িত হবে, বার্ধক্যের ইবাদত সেভাবে হবে না। এটা যৌক্তিক বিচারেও সত্য। কারণ, বার্ধক্য এলে এমনিতেই মানুষের শক্তি-সামর্থ্য কমে আসে। তখন তো চাইলেও খারাপ কাজে লিপ্ত থাকা যায় না। ফার্সি কবি শেখ সাদি চমৎকার বলেছেন, ‘যৌবনে তওবা করা নবীদের অভ্যাস/বার্ধক্যে তো অত্যাচারী বাঘও সাধু-সন্তু হয়ে ওঠে।’
এ কারণেই হাদিস শরিফে যৌবনে ইবাদতে অভ্যস্তদের জন্য বিশাল সুখবর দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন আরশের ছায়ায় জায়গা দেবেন, যেদিন সে ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। তাদের মধ্যে একজন হলো সেই যুবক, যে আল্লাহর ইবাদতে বেড়ে উঠেছে।’ (সহিহ মুসলিম)
তবে দুঃখজনক সত্য হলো, আমাদের চারপাশে যুবকদের ইবাদতবিমুখ করার রকমারি আয়োজন সম্পন্ন করা আছে। আগে আমরা যেসব সামাজিক মূল্যবোধ লক্ষ করতাম, কাল-পরিক্রমায় তা আজ বিপন্ন। যুবকেরা বৃদ্ধ ও বয়স্কদের দেখে রাস্তার এক পাশে সরে পড়ত। কোনো অসামাজিক কাজ করলেও অত্যন্ত নির্জনে করার চেষ্টা করত। কিন্তু বর্তমানে এসব মূল্যবোধ শূন্যের কোঠায়। মাত্রাতিরিক্ত নৈতিক স্খলনের ফলে যুবকদের অপরাধজগতে হারিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। অভিভাবকেরা সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সব সময় দুশ্চিন্তায় থাকছেন। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় হলো, যুবকদের ইবাদতে উৎসাহিত করে নৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা।
Discussion about this post