নিজস্ব প্রতিবেদক
লক্ষ্মীপুর পৌর লাহারকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল গফুর পছন্দের প্রার্থীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়েছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। এজন্য পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ৫ প্রার্থীর ৪ জনকেই প্রবেশ পত্র পাঠানো হয়নি।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সকালে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ ৮টি দপ্তরে আনোয়ার হোসেন নামে এক প্রার্থী অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারী আনোয়ার বিদ্যালয়ের পরিচ্ছন্নতাকর্মী প্রার্থী ছিলেন। তিনি লাহারকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্যানেল চেয়ারম্যান আবদু সহিদের ছেলে।
অভিযোগ সূত্র ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,১৭ আগস্ট আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ভবনে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু কোন-ভাবেই আনোয়ার প্রবেশপত্র পাননি। পরীক্ষার আগের দিন প্রধান শিক্ষক মোবাইল-ফোনের মাধ্যমে তার অংশগ্রহণের বিষয়টি জানায়। পরে প্রবেশপত্র ছাড়াই আনোয়ারসহ ৪ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষার ৭ দিনের মধ্যে ফলাফল দেওয়ার কথা থাকলেও তা প্রকাশ করা হয়নি। প্রধান শিক্ষক তার পছন্দের লোককে ওই পদে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির দুইজন সদস্য জানায়, কম্পিউটার অপারেটর ৩ জনের মধ্যে উত্তীর্ণ সানজিদা সুলতানা প্রধান শিক্ষক আবদুল গফুরের বাড়ির। তারা আত্মীয়-স্বজন। চাকুরি’টি দেওয়ার জন্য শিক্ষক গফুর তার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে ১ লাখ টাকা নিয়ে প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমকে উত্তীর্ণ করানো হয়। ৫ জন প্রার্থী থাকলেও বিদ্যালয় থেকে একমাত্র জাহাঙ্গীর’কেই প্রবেশপত্র পাঠানো হয়েছে। অন্য প্রার্থীদের পরীক্ষার আগের দিন মুঠোফোনে জানানো হয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মেহেদি হোছাইন মাসুম মোল্লা বলেন, কম্পিউটার অপারেটর পদে ৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে বলে শুনেছি। এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষককে জিজ্ঞেস করেছি। তিনি অস্বীকার করেছেন।
বিদ্যালয়ের আরেক কমিটির সদস্য কামরুজ্জামান মোল্লা বলেন আমি বিদ্যালয়ের নতুন সদস্য।তিন মাস হলো আমাদের মেয়াদ।তবে আমিও স্বচ্ছ নিয়োগ চাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল গফুর বলেন, যথাযথ নিয়মে নিয়োগ পরীক্ষা শেষে উত্তীর্ণদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কম্পিউটার অপারেটর পদে সানজিদা সুলতানা ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে জাহাঙ্গীর আলম উত্তীর্ণ হয়। নিয়োগে কোন টাকা পয়সা লেনদেন হয়নি। কেউই আমার আত্মীয় নয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেক প্রার্থীকেই ডাকঘরের মাধ্যমে প্রবেশপত্র পাঠানো হয়েছিল। অভিযোগকারীরা অভিযোগ প্রমাণিত করতে না পারলে আমি মানহানি মামলা করবো।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও লক্ষ্মীপুর পৌরসভার মেয়র মোজাম্মেল হায়দার মাসুম ভূঁইয়া বলেন, যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি পরীক্ষা নিয়ে তারা বিভিন্ন অভিযোগ তুলছে। তাদের অভিযোগ সত্য নয়। টাকা লেনদেনের বিষয়টি আমি শুনেনি। কেউ আমার কাছে অভিযোগও করেনি।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, নিয়োগে অনিয়মের কোন সুযোগ নেই। অভিযোগটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Discussion about this post