শিশুদের অটিজমের লক্ষণ গুলো এক থেকে তিন বছরের মধ্যে বোঝা যায়।
শিশুদের অটিজমের লক্ষণ গুলো এক থেকে তিন বছরের মধ্যে বোঝা যায়।
অটিজমের বৈশিষ্ট্য নিয়েই একটা শিশু মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেয়।
অর্থাৎ অটিজম একটা জন্মগত ব্যাপার। তাই শিশুর বয়স একটু একটু করে বাড়ার সাথে সাথে প্রকাশ পেতে থাকে এই লক্ষণ গুলো।
মা-বাবা একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারেন অন্য শিশুদের সঙ্গে তার নিজের বাচ্চার আচরণগত সমস্যা।
মিলু ইয়াসমিন বলছিলেন, তাঁর বাচ্চার আচরণ তিন বছর বয়স পর্যন্ত ঠিক ছিল।
কিন্তু তার পরেই কিছু কিছু পার্থক্য তাঁর চোখে পরতে থাকে।
তিনি বলেন “এক বছর থেকে তিন বছর বয়স পর্যন্ত আমার সন্তানকে নানা ধরণের ছড়া শিখিয়েছিলাম। এর মধ্যে বাংলা যেমন ছিল তেমন ছিল ইংরেজি ছড়া”।
মিজ ইয়াসমিন বলেন “তিন বছরের পর থেকেই খেয়াল করলাম সে ছড়া থেকে দুই একটা শব্দ বলে, বাকিটা বলতে পারছে না। কি হচ্ছে সেটা বুঝে উঠতে আরো কয়েক মাস সময় লাগলো। এর পর ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি (চিকিৎসক) জানান আমার সন্তান অটিস্টিক। ভবিষ্যতে তার কথা আরো কমে যাবে। এমনকি কথা নাও বলতে পারে”।
এটাকে বলে অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার।
অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার বা এএসডি একটি সারাজীবনের প্রতিবন্ধকতা যার দ্বারা বাকি বিশ্বের সাথে কোন ব্যক্তির যোগাযোগ স্থাপন এবং সম্পর্ক তৈরি বাধাগ্রস্ত হয়।
এএসডি আক্রান্ত মানুষদের বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকারিতা স্তর-ভেদে ভিন্ন হয়, এবং তা গভীর মাত্রা থেকে উচ্চতর মাত্রায় প্রসার লাভ করে।
অটিজম, এই শব্দটি বলতে অনেকে মানসিক রোগ বুঝলেও এটি মূলত এক ধরণের স্নায়ুবিক বিকাশ-জনিত সমস্যা।
অটিজম আক্রান্তদের অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ ও সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা থাকে।
অটিস্টিক শিশুদের অকুপেশনাল থেরাপিষ্ট কাজী আলামিন। তিনি বলছিলেন, শিশুদের এক থেকে তিন বছর বয়সের মধ্যেই অটিজমের লক্ষণ গুলো ধরা যায়।
সমবয়সীদের সাথে না থাকা
অটিস্টিক শিশুরা কখনই তার সমবয়সী শিশুদের সাথে মিশবে না।
তাদের সাথে খেলা করা, গল্প করা বা তাদের সঙ্গ তার ভালো লাগবে না। কোন আগ্রহ থাকবে না তার সমবয়সীদের সাথে।
সে সব সময় একা একা থাকার চেষ্টা করবে। ঘরের একটা নির্দিষ্ট স্থানে নিজের মত থাকার চেষ্টা করবে।
খেলনা আলাদা হলেও খেলার ধরণ একই হবে।
পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ
এই ধরণটা হবে তার আচরণের অনেক কিছুই সে বার বার করবে।
যেমন আপনি তাকে একটা খেলনা দিলেন সেটা সে এক ভাবে খেলবে।
তাকে আবার অন্য একটা খেলনা দিলেন সেটাও সে ঐ একই ভাবে খেলবে।
অর্থাৎ তার সব খেলনা নিয়ে খেলনা নিয়ে খেলার প্যাটার্ন একই থাকবে।
যদিও আপনি তাকে ভিন্ন নিয়মে খেলার দুটি খেলনা তাকে দিয়েছেন। বা তাকে একটা গ্লাসে পানি আনতে বললে একই ভাবে সে বার বার পানি আনবে।
চোখে চোখ রেখে কথা না বলা
অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা আপনার চোখে চোখ রেখে কথা বলবে না।
যদি আপনি তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেন বা কাজ করার চেষ্টা করেন তাহলে সে আপনার চোখের দিকে তাকাবে না। তার ‘আই কন্টাক্ট’ থাকবে না।
কথা বলায় জড়তা
কোন কোন শিশুর ক্ষেত্রে কথা বলায় জড়তা থাকতে পারে।
আবার কোন কোন ক্ষেত্রে দেখা যাবে শিশু একেবারে কথায় বলছে না।
বা একটা বয়স পর্যন্ত কথা বললেও পরে আস্তে আস্তে ভুলে যাচ্ছে।
ধৈর্য কম থাকা
এই শিশুদের ধৈর্য কম থাকবে। এমনকি একটা খেলনা দিলে সেই খেলনার প্রতি ধৈর্য নিয়ে এক মিনিট খেলা করাটা তার জন্য কঠিন হবে।
Discussion about this post