কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের বিভিন্ন বাজারে নতুন ধান উঠতে শুরু করেছে। বাজারে নতুন ধান আসতেই কমতে শুরু করেছে ধানের দাম।
খোলা বাজারে ধান মণপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, নানা কারণে চলতি মৌসুমে বোরো চাষে খরচ বেশি হয়েছে। কিন্তু খোলা বাজারে যে দামে বিক্রি হচ্ছে, সে দামে বিক্রি করলে অনেক লোকসান হবে। সরকারিভাবে কেজিপ্রতি ২৭ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকায় কিনলে কিছুটা লাভ থাকবে। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী গত ২৫ মে বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। কৃষকেরা স্বস্তিতে বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে পেরেছেন। এবার ফলনও ভালো হয়েছে। তবে সরকারের নির্ধারিত দাম বাড়ানোর এখতিয়ার উপজেলা কৃষি অফিসের নেই।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ৯ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে উৎপাদন হয়েছে ১০ হাজার ২৫৭ হেক্টর জমিতে। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও চাষ হয়েছে প্রায় ১০০ হেক্টর বেশি জমিতে। উপজেলায় চালের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪২ হাজার ৪৬০ মেট্রিক টন। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে বাজারে ভেজা ধানের দাম ভালো। প্রতি মণ ধান ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুধু ধান কাটা ও খলায় পৌঁছানো পর্যন্ত পারিশ্রমিক হিসেবে শ্রমিকদের ১০ থেকে ১২ শতাংশ ধান দিতে হয়। অর্থাৎ ১০০ বস্তা ধানের জন্য ১০ থেকে ১২ বস্তা ধান দেওয়া হয়েছে। আবার ধান মাড়াইয়ের জন্য ১০০ বস্তায় দিতে হয় ৫ থেকে ৭ বস্তা। নগদ টাকায় ধান কাটালে দিতে হয় ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা। দূরের জমি থেকে ধান কেটে আনলে দিতে হয় জনপ্রতি প্রতিদিনের মজুরি দিতে হয় ১ হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়া জমিতে চারা রোপণ, সার, কীটনাশক দেওয়ায় প্রচুর খরচ করতে হয়। তাই বোরো ধান কাটার পর ভালো দাম না পেলে সারা বছরের খাদ্য মজুত করা সম্ভব হবে না কৃষকদের।
উপজেলার কালনা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করতে যে টাকা খরচ হয়েছে বিক্রি করেছি প্রায় সমান দামে। সরকারের নির্ধারিত ২৭ টাকার পরিবর্তে ৩০ টাকা কেজি দরে ধান কিনলে আমরা একটু লাভের মুখ দেখতে পারতাম। তা ছাড়া খাদ্যগুদামে আমাদের মতো কৃষকেরা ধান দিতে পারি না কখনো।’
সহিলাটি গ্রামের কৃষক সাহাব উদ্দিন এবং কালনা গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, দফায় দফায় বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি এবং কৃষিশ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে কৃষকের। তা ছাড়া চলতি মৌসুমে নদীনালায় পানি না থাকায় সেচেও বেশি খরচ হয়েছে। খোলা বাজারে বিক্রি করলে লোকসানে ধান বিক্রি করতে হবে। সরকারিভাবে ৩০ টাকা কেজি দরে ধান কেনা হলে কিছুটা লাভের মুখ দেখা যেত।
এ নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, খরা, কালবৈশাখী, শিলাবৃষ্টিতে এ বছর বোরো ধানের কোনো ক্ষতি হয়নি। তা ছাড়া সেচ, সার সরবরাহ ও কৃষি উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় ফলনও বাম্পার হয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃষিনির্ভর উপজেলায় মানুষ একমাত্র বোরো ফসলের ওপর নির্ভরশীল। তাই বোরো ধান তোলার সময় কৃষক পরিবারের সব সদস্য মিলে আনন্দের মধ্য দিয়ে গোলায় ধান তুলেছেন।’
সরকারিভাবে ধানের দাম বাড়ানো নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘সরকারের নির্ধারিত দাম বাড়ানোর এখতিয়ার
Discussion about this post