নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
বিএনপির নেতারা দুর্নীতি দমন কমিশনে গিয়ে যে মহড়া দিয়েছেন, তা নিজেদের দুর্নীতি ও ব্যর্থতা আড়ালের অপচেষ্টা বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিএনপির নেতাদের উদ্দেশে কাদের বলেন, ‘অনেক তথ্যই সরকারের কাছে আছে, কে কোথায় সভা করছে, কাকে টাকা দিচ্ছে। এমনকি সরকারের বিরোধিতার নামে রাষ্ট্রবিরোধী কাজে উসকানির জন্য দুর্নীতিলব্ধ অর্থ বিনিয়োগ করা হচ্ছে।’
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবন এলাকার বাসভবনে ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির কথিত আন্দোলন আর অভ্যুত্থানের রঙিন খোয়াব ভেঙে যাওয়ায় তারা জনগণের নজর এখন ভিন্ন দিকে নিতে চায়। কর্মী-সমর্থকদের রোষানল থেকে বাঁচতেই বিএনপির নেতারা দুর্নীতির তথ্য প্রদানের নামে নাটকীয়তার আশ্রয় নিচ্ছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, কারা কর ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে, আবার দুর্নীতিবাজ নেতৃত্বের জন্য অবৈধ উপায়ে অর্থ প্রেরণ করছে, সব খবরই সরকারের কাছে আছে। এসব অপরাধী কেউই ছাড় পাবে না।
বিএনপির মহাসচিবের কাছে প্রশ্ন রেখে কাদের বলেন, নিজ দলের অপরাধী, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে আপনাদের অবস্থান কী? সাহস থাকলে তাদের তালিকা দিন। বিদেশে বিলাসী জীবনের রসদ কোথা থেকে আসছে তার হিসাব জমা দিন। সর্ষের মধ্যে ভূত রেখে ভূত তাড়ানোর এসব লোক দেখানো অপপ্রয়াস অপরাজনীতিরই ধারাবাহিকতা মাত্র।
আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত বিএনপি যখন দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে তখন মানুষের হাসি পায় বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আত্মস্বীকৃত দুর্নীতিবাজ দলের এমন মুখরোচক কথার নৈতিক মানদণ্ড নিয়েও মানুষ পরিহাস করে।
অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শেখ হাসিনা শূন্য সহিষ্ণুতা নীতিতে অটল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে এর প্রমাণ জনগণ ইতিমধ্যে দেখেছে। যে যত বড় নেতাই হোক, অনিয়মের অভিযোগ পেলে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। সরকারি দলের অনেক নেতা, এমপি এমনকি মন্ত্রী পর্যন্ত ছাড় পায়নি।
দুদক স্বাধীনভাবে কাজ করছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারি দলের বিরুদ্ধেও দুদকের কাজ করতে কোনো বাধা ছিল না এবং এখনো নেই।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যানসহ তাদের অনেক নেতার বিরুদ্ধে দুদকে যে তথ্য বা অভিযোগ আছে, সে ব্যাপারেও দুদক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করেন ওবায়দুল কাদের।
বিএনপির চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে অন্য যে অভিযোগ আছে, সেগুলোরও তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন ওবায়দুল কাদের।
শেখ হাসিনার সততার বিষয়টি দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছে উল্লেখ করে কাদের বলেন, আজ যারা বড় বড় কথা বলছেন, লোক দেখানো নাটক করছেন, তাদের শাসনামলে নিজ দলের এমপি, মন্ত্রী কিংবা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের একটি প্রমাণ তারা দেখাতে পারবেন না।
বিএনপির নীতি ছিল দলীয়ভাবেই দুর্নীতিবাজদের পৃষ্ঠপোষকতা করা উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির শাসনামল আর দুর্নীতি সমার্থক হয়ে গিয়েছিল। একদিকে দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে, আবার অন্যদিকে কল্পিত অভিযোগ করাকে জনগণ নৈতিকতাবিরোধী বলেই মনে করে।
Discussion about this post