ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজ, ঢাকা
রমজানে মুখের সুস্বাস্থ্য
রমজানে দাঁতের ব্যথা, মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া, ক্ষতসহ মুখের অনেক সমস্যা রোজাদারদের কষ্টের কারণ হতে পারে। রমজানে দাঁতের কিছু সমস্যা বাড়ে। তাই জেনে নিই রোজায় মুখের অভ্যন্তরের যত্ন কীভাবে নেব।
মুখে দুর্গন্ধ ও করণীয়
গবেষকদের মতে, রোজা অবস্থায় মেসওয়াক বা প্রয়োজনে সাবধানতার সঙ্গে দাঁত ব্রাশও করা যেতে পারে। গন্ধ ও স্বাদবিহীন টুথপেস্ট পাওয়া যায়। একান্তই না পারলে মেসওয়াক কার্যকর। তবে সেটা যেন নরম ও নিয়ম মাফিক হয়। শক্ত মেসওয়াক বা ব্রাশ দাঁতের প্রতিরক্ষা আবরণকে ক্ষয় করতে পারে।
ইফতার ও সাহ্রির পর অন্তত দুই মিনিট করে নিয়ম অনুযায়ী দাঁত ও মুখ পরিষ্কার করা। সাহ্রির পর ডেন্টাল ফ্লস করা; প্রয়োজনে অ্যালকোহলমুক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহার করা। অজুর সময় ভালোমতো কুলি করা ও মাড়ি ম্যাসাজ করা উচিত।
মুখের শুষ্কতা ও করণীয়
সারা দিন পানি পান না করা ও না চিবানোর কারণে লালা নিঃসরণ কমে মুখ শুষ্ক হয়ে পড়ে। ফলে লালার স্বাভাবিক কাজ যেমন দাঁত পরিষ্কার রাখা, জীবাণু প্রতিহত করা, মুখ পিচ্ছিল রেখে কথা বলতে সাহায্য করা ও ঘর্ষণজনিত ক্ষুদ্র ক্ষত থেকে রক্ষা করাসহ নানা বিষয় ব্যাহত হয়। শুষ্ক মুখ রোগ তৈরির অনুকূল।
এ জন্য ইফতারের পর পর্যাপ্ত তরল পান করুন। বাজারের কোমল পানীয় বা কৃত্রিম ফলের জুস পরিহার করুন। শরীরের অন্যান্য রোগ বিবেচনা করে লেবুর শরবত, মৌসুমি ফলের জুস যেমন কাঁচা আম, মালটা, বেল, আনারস, তরমুজ, ইসবগুলের ভুসি জাতীয় তরল পান করুন। তবে চিনি মুক্ত রাখা শ্রেয়। সাহ্রির শেষ সময়ের ৩০ মিনিট আগে খাবার খেয়ে ২০ মিনিট পর পর্যাপ্ত পানি পান করা ভালো। যাদের মুখ অতিরিক্ত শুষ্ক হয়, তাঁরা সাহ্রির পর দুইটা এলাচ দানা চিবিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন। খুব বেশি শুষ্ক থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
অন্যান্য রোগ ও করণীয়
রমজানে আমরা চিনির শরবত, জিলাপি, মিষ্টি ইত্যাদি বেশি খাই; যা দাঁতের ক্ষতি করে। অন্যদিকে ভাজা পোড়া থেকে পেটের অ্যাসিড মুখে এসে দাঁত ক্ষয় করতে পারে। যাঁদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ আছে তাঁদের ওষুধের মাত্রা ও সময় পরিবর্তনে অসুখের মাত্রা বেড়ে মুখের স্বাস্থ্য বিপন্ন হতে পারে।
এ জন্য খাবারের তালিকা স্বাস্থ্যবান্ধব হতে হবে। সেদ্ধ মোটা চাল বা লাল চালের ভাত খেতে পারেন। এমনকি ছোলা ভাজার পরিবর্তে সাহ্রির সময় কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে ইফতারিতে আদাকুঁচি দিয়ে খাওয়া ভালো। খেজুরের উপকারিতা অনেক, সঙ্গে একটা আপেল বা কলা খাওয়া যেতে পারে। শসা, ক্ষীরা, পেয়ারা এগুলো বেশি খেতে পারবেন। মুড়ি বা চিড়া খাওয়া যায়।
ডা. মো. আসাফুজ্জোহা রাজ,
Discussion about this post