রমজানে সারা দেশের ১ কোটি নিম্ন আয়ের পরিবার স্বল্প মূল্যে পাবে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য। আগামী রোববার থেকে তেল, চিনি, মসুর ডাল ও ছোলা ফ্যামিলি কার্ডের তালিকা ধরে পৌঁছে দেওয়া হবে এসব মানুষের হাতে। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি ও বিতরণের এই কার্যক্রম পরিচালনা করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনের মিলনায়তনে আজ শুক্রবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, করোনার সময়ে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে নগদ সহায়তা প্রদানের যে ডেটাবেজ প্রণয়ন করা হয়, তার মধ্যে ৩০ লাখ পরিবার, সারা দেশে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসনের সহায়তায় ৫৭ লাখ ১০ হাজার উপকারভোগী পরিবারের জন্য ফ্যামিলি কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। এর বাইরে ঢাকা সিটি করপোরেশনে ১২ লাখ এবং বরিশাল সিটি করপোরেশনে ৯০ হাজার উপকারভোগী রয়েছে। এসব মানুষই টিসিবি ভ্রাম্যমাণ ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে পারবেন।
প্রথম দফায় টানা ১১ দিন ট্রাক থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে ২ লিটার সয়াবিন তেল, প্রতি কেজি ৫৫ টাকা দরে ২ কেজি চিনি ও ৫৬ টাকা দরে ২ কেজি মসুর ডাল বিক্রি করা হবে। দ্বিতীয় দফায় ৩ এপ্রিল থেকে এই তিন পণ্যের সঙ্গে যুক্ত হবে প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে ২ কেজি ছোলা এবং ৮০ টাকা দরে ২ কেজি করে খেজুর। এই কার্যক্রম পরিচালিত হবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জেলা প্রশাসনের সহায়তায়।
এরই মধ্যে জেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে টিসিবি পণ্য পৌঁছে গেছে জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, রোববার (২০ মার্চ) নিজ জেলা রংপুর থেকে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। পণ্য বিক্রির সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। জেলা, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পর্যায়ের যেসব জায়গায় টিসিবির ট্রাকে পণ্য বিক্রি করা হবে, দুদিন আগেই সেসব এলাকায় ঘোষণা দিয়ে তারিখ, সময় ও স্থান জানিয়ে দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যথেষ্ট ঘাটতি আছে। হুট করে এত মানুষের জন্য পণ্য সরবরাহ খুব কঠিন কাজ। তবুও টিসিবির তরফ থেকে আমাকে জানানো হয়েছে, তারা যথেষ্ট প্রস্তুত আছে এই কার্যক্রম পরিচালনার জন্য। আমাদের ইচ্ছা, প্রতিদিন ১ হাজার ট্রাকে করে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।’
পণ্যের দামের অস্থিরতা কমাতে না পারায় বিভিন্ন মহল থেকে বাণিজ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি উঠছে। এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কী ভাবছেন জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দাম তো বাড়ছে সারা বিশ্বেই। এর প্রভাব দেশেও পড়েছে। ব্রাজিলে তেলের দাম বাড়ায় যদি আমাকে পদত্যাগ করতে হয়, তাহলে আমি করতে পারি। আমার কোনো সমস্যা নাই। সাপ্লাই চেইন, মানুষের ডিমান্ড, হুট করে যদি মানুষ বেশি বেশি পণ্য কিনতে শুরু করে, তাহলে তো দাম বাড়বেই। যখন কোনো জিনিসের দাম বাড়তে থাকে তখন শুধু বাড়েই। যখন পেঁয়াজের দাম বেশি ছিল, তখন প্লেনে করে পেঁয়াজ এনে খাওয়াইছি। পরে পেঁয়াজের দাম কমায় চাষিরা সেগুলো রাস্তায় ফেলে প্রতিবাদ জানালেন। কোন দিকে যাবেন? দুদিকেই সমস্যা।’
টিসিবির পণ্যগুলো সুষ্ঠুভাবে বিতরণের জন্য এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বা সমপর্যায়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বা কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/কর্মচারী পদায়ন ও নিয়োগ করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
Discussion about this post