
মনির আহমদ
লক্ষ্মীপুরের মেঘনায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে করে দুর্ভোগে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। তবে নদীতে ভাটা পড়লে পানি কিছুটা নামলেও আবার জোয়ার এলে তা বাড়তে থাকে। গত তিন দিন ধরে চার থেকে পাঁচ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডর কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ।
ফারুক আহমেদ জানান, সামনে পূর্ণিমা, সে জন্য নদীতে পানি বাড়ছে। এটি আরও কয়েক দিন থাকবে। ভাটা পড়লে লোকালয় থেকে পানি নেমে যায়। আবার জোয়ার এলে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ে। তবে বাঁধ নির্মাণকাজের কোনো সমস্যা হবে না বলেও দাবি করেন তিনি।
এ ছাড়া অস্বাভাবিক জোয়ারের পানির তোড়ে ভাঙন আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। গত দুই দিনে এই উপজেলায় দুই শতাধিক পরিবার ভাঙনের মুখে পড়ছে বলে জানিয়েছেন নদীপারের বাসিন্দারা।
শুক্রবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্চ, চরফলকন, লধূয়া, চর কালকিনি, চরমার্টিন, মতিরহাট নাছিরগঞ্জ এলাকায় গিয়েও এমন চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, মেঘনার তীরবর্তী এলাকায় বেড়িবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি খুব সহজে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে নদীভাঙনসহ উপকূলীয় বাসিন্দাদের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। কমলনগর উপজেলার কালকিনি, সাহেবেরহাট, পাটওয়ারীরহাট, চরফলকন, চরমার্টিন, চরলরেঞ্চ ইউনিয়ন এবং রামগতি উপজেলার আলেকজান্ডার, বড়খেরী, চরগাজী, চরআবদুল্লাহ ইউনিয়নের প্রায় ২০টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
কমলনগর উপজেলার চরলরেঞ্চ এলাকার বাসিন্দা মামুনুর রশিদ ও জসিম উদ্দিন জানান, পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানি গত তিন দিন ধরে বাড়তে শুরু করেছে। তবে বৃহস্পতি ও শুক্রবার পানির পরিমাণ বেড়েছে। এতে নদীর তীরসংলগ্ন বসতবাড়িতে পানি উঠে গেছে। এই ইউনিয়নের মাছের ঘের ও অনেক পুকুরের মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এ ছাড়া রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
রামগতি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরাফ উদ্দিন আজাদ সহেল বলেন, রামগতি উপজেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চর আবদুল্যা ইউনিয়নের পুরো এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া বড়খেরী, চরগাজী, চর আলেকজান্ডারসহ কয়েকটি ইউনিয়নে গত তিন দিন ধরে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, ফসলি জমি জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায়। বিকেলের দিকে পানি নেমে পড়ে। আরও কয়েক দিন এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে বলে জানান তিনি।
কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, এই উপজেলার কয়েকটি এলাকা অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। পরে জোয়ারের পানি নেমে যায়। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।





Discussion about this post