Tuesday, November 11, 2025
The Daily
No Result
View All Result
No Result
View All Result
No Result
View All Result
Home সাহিত্য ইতিহাস-ঐতিহ্য

ম্রো ভাষা প্রচার ও ধর্ম সংরক্ষণে চিম্বুকের কোলে ‘ক্রামা’ সম্মেলন

ক্রামা ধর্ম প্রবর্তক ও বর্ণমালা আবিষ্কারক মেনলে ম্রোয়ের স্মৃতিস্বরূপ খোদাই করা ক্রামা পুস্তক, টেবিল ও চেয়ার। ছবি: সংগৃহিত

নিজস্ব প্রতিবেদক by নিজস্ব প্রতিবেদক
January 1, 2025
in ইতিহাস-ঐতিহ্য
0
ম্রো ভাষা প্রচার ও ধর্ম সংরক্ষণে চিম্বুকের কোলে ‘ক্রামা’ সম্মেলন
0
SHARES
8
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

বাংলাদেশ নিউজ ডেস্ক

শীত এলেই বান্দরবানে চিম্বুক পাহাড় যেন নিজেকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলে। পাহাড় জুড়ে মেঘের সঙ্গে সূর্যের আলো-ছায়া উপভোগ করতে সারা দেশ থেকে ছুটে আসে প্রকৃতি প্রেমিরা। তেমনি পাহাড়ে ম্রো সম্প্রদায়ের মানুষও ছুটে আসে ধর্ম সম্মেলন ক্রামাদি পাড়ায়।

RelatedPosts

No Content Available

১৯৮৬ সালে বান্দরবান সদর উপজেলা টংকাবতি ইউনিয়নে বাইট্যাপাড়ায় ম্রোদের প্রথম ধর্ম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২০২৩ সালে থানচি উপজেলার মেনরোয়া ম্রো পাড়ায় আয়োজিত হয় ৩৯তম ধর্ম সম্মেলন। ডিসেম্বরে পূর্ণিমা তিথিকে ঘিরে দুদিনের এই সম্মেলন শুরু হয়। এ বছর ১৪ ১৫ ডিসেম্বর ছিল ম্রো জনগোষ্ঠীর ক্রামা ধর্মের ৪০তম বার্ষিক এই ধর্মীয় সম্মেলন।

বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলা থেকে ধর্ম সম্মেলনে অংশ নিতে আসা পাড়া পুরোহিতরা শীতের সকালে মিষ্টি রোদে বসে কুশল বিনিময় করছেন। ছবি: সংগৃহীত

১৯৬৫ সালে পাহাড়ে এক জুমচাষীর ঘরে জন্ম নেন ম্রোদের নিজস্ব ক্রামাদি বা ক্রামা ধর্মের প্রবর্তক ও বর্ণমালা ‘ক্রামা’ আবিষ্কারক মেনলে ম্রো।থারকিম’ বা বর্ণমালা ঘর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় এবারের ক্রামা ধর্ম সম্মেলন। নিজেদের ধর্ম, ভাষা ও বর্ণমালার টানে শত শত ম্রো নারী-পুরুষ দূরদূরান্ত থেকে অনুষ্ঠানে আসেন।তারা মনে করেন, বর্ণমালা হলো ভাষা রক্ষার অন্যতম উপাদান ও মাধ্যম।

আর ভাষা রক্ষা হলেই সমাজের কৃষ্টি-সংস্কৃতি, ঐতিহ্য-প্রথা, মূল্যবোধের বিকাশ ঘটবে। এই উপলব্ধি থেকে নিজেদের উদ্যোগে ও অর্থায়নে ‘থারকিম’ নির্মাণ করেছেন তারা। স্রো ভাষায় থারকিম শব্দের আরেকটি অর্থ হচ্ছে নতুন ফুলের কলি থেকে ফোটা ফুল। ম্রো ভাষার বর্ণমালা পৃথিবীর নবীনতম হওয়ায় এর নাম রাখা হয়েছে থারকিম।

থারকিম। ছবি: সংগৃহীত

বান্দরবান সদর উপজেলার চিম্বুক-থানচি সড়কে জেলা শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে ক্রামাদি পাড়া। সম্প্রতি পাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, সাদা লুঙ্গি-শার্ট ও মাথায় পাগড়ী পরে কয়েকজন বয়োবৃদ্ধ গোল হয়ে সকালে মিষ্টি রোদে বসে গল্প করছেন।

তাদের একজন ম্রো ভাষায় গল্প বলছেন, আর নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েরাসহ বাকিরা মনোযোগ দিয়ে তা শুনছেন। সেখানে ছিলেন খেদডিং ম্রো। ভাষা ও ধর্ম সংরক্ষণে ধর্ম সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন আলীকদম উপজেলার দুর্গম কুরুকপাতা ইউনিয়নের খেদডিং পাড়ার এই ধর্মপ্রচারক।

সবাই এত মনোযোগ দিয়ে কী শুনছেন জানতে চাইলে খেদডিং ম্রো বাংলাদেশ নিউজকে বলেন, ‘এতদিন আমাদের কথ্য ভাষা থাকলেও লৈখিক রূপ ছিল না। আমাদের পূর্বপুরুষরা পৌরাণিক গল্পের আকারে এগুলো বলতেন। পাহাড়ে ম্রো ছাড়াও সব ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী সমাজে পৌরাণিক গল্পের আকারে মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত আছে, একদিন সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীর সব জাতি-সম্প্রদায়কে ডেকে ভাষা ও বর্ণমালা বিতরণের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিলেন।

তখন সৃষ্টিকর্তা কলাপাতায় লিখে পৃথিবীর প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ভাষা বিলিয়ে দিচ্ছিলেন। সে সময় অন্যান্য সব জাতি-সম্প্রদায় নিজ নিজ ভাষা বুঝে পেলেও ম্রোদের ভাষা গ্রহণ করার মতো প্রতিনিধি উপস্থিত না থাকায় এক গাভীর মাধ্যমে পাঠানো ব্যবস্থা করেন।

‘গাভীটি ম্রো বর্ণমালা সম্বলিত কলাপাতা মুখে নিয়ে ম্রো গ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। পাহাড়-পর্বত ডিঙ্গিয়ে আসতে আসতে গাভীটি ক্লান্ত শরীরে এক ডুমুর গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেয়। তৃষ্ণার্ত ও ক্লান্ত শরীরে বিশ্রামের একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমের ঘোরে গাভীটি ম্রো বর্ণমালা সম্বলিত কলাপাতাটি চিবিয়ে খেয়ে ফেলে।’এদিকে ম্রো জাতির প্রতিনিধি ধর্ম, ভাষা ও বর্ণমালা বিতরণ সভায় গিয়ে জানতে পারেন যে এক গাভীর মাধ্যমে ম্রো ধর্ম ও বর্ণমালা পাঠানো হয়েছে।

তাই গাভীর খোঁজে পাহাড়ি পথে আসতেই দেখা মেলে সেই কাঙ্ক্ষিত গাভীর। মানুষ আসার শব্দ পেয়ে গাভীটি ঘুম ভেঙে দেখে, ম্রো জাতির একজন দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি গাভীর কাছে বর্ণমালা চাইলে গাভীটি প্রথমে স্বীকার করে যে “আমি আপনাদের বর্ণমালা বাহক”।

পরক্ষনেই বর্ণমালা খুঁজে হতভম্ব হয়ে যায় গাভীটি। বুঝতে পারে, ম্রো বর্ণমালার বইটি সে ঘুমের ঘোরে খেয়ে ফেলেছে। ম্রো যুবকটি রাগের মাথায় গাভীটির মুখে জোড়ে একঘুষি দেয়, যার কারণে গাভীর মুখে উপরের পাটির সব দাঁত খুলে পড়ে যায় এবং এর মাথা পাশে থাকা ডুমুর গাছে ধাক্কা লাগে।

‘সেদিনের পর থেকে গরু বা গাভীর মুখে উপরে পাটিতে দাঁত নেই এবং ডুমুর জাতীয় বৃক্ষও সোজা না হয়ে বাঁকা হয়ে যায়। এরপর থেকে ম্রো বর্ণমালাও পাওয়া যায়নি।

তাদের এই বিশ্বাস বর্ণনা করে খেদডিং ম্রো বলেন, ‘এ কারণে এতদিন ম্রো সম্প্রদায় মানুষদের মুখের ভাষা থাকলেও লিখিত কোনো রূপ ছিল না। এই বিশ্বাসের জায়গা থেকে ম্রো সম্প্রদায়ের মানুষ গরুর প্রতি প্রতিশোধ হিসেবে প্রতি বছর “গো হত্যা” উৎসব পালন করে আসছে।’তিনি বলেন, ‘১৯৮২ সালে মেনলে ম্রোর হাত ধরে আমাদের ক্রামা ধর্ম ও ক্রামা বর্ণমালা উদ্ভাবিত হয়েছে।

প্রতি বছর আমরা ধর্ম সম্মেলনে মিলিত হই ধর্মীয় রীতিনীতি, ভাষা সংরক্ষণ ও প্রচার-প্রচারণার জন্য।খেদডিং ম্রো জানান, ম্রোদের নিজস্ব ধর্ম ও বর্ণমালা আবিষ্কারের পর থেকে ‘গো হত্যা’ উৎসব বর্জন করা হয়েছে।পাড়া থেকে প্রায় ২০০ মিটার দক্ষিণে দেখা যায়, বটগাছের নিচে আধা পাকা ছোট ছোট তিনটি ঘর।

প্রথমটি ক্রামা বর্ণমালা ঘর। দ্বিতীয়টি মেনলে পিতা-মাতার কবরস্থান। তৃতীয়টি মেনলে ধ্যানের পাথর।মেনলে ম্রোর ভাই কিরওয়ান ম্রো জানান, সবুজ বনবেষ্টিত মনোরম পাহাড়ের একটি পাথরে বসে ধ্যানের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় কার্য শুরু করেছিলেন মেনলে ম্রো। ধ্যানের মাধ্যমে ক্রামাদি ধর্ম প্রবর্তন করেছিলেন তিনি। এই ঘরটির নাম ‘থারকিম’।

ক্রামা বর্ণমালা আত্মপ্রকাশের পূর্বে পাথরে খোদাই করে রেখেছিলেন ক্রামা ধর্ম প্রবর্তক ও বর্ণমালা আবিষ্কারক মেনলে ম্রো। ছবি: সংগৃহিত

বটগাছের ছায়ায় প্রথম বর্ণমালা আবিষ্কার করার পর জনসম্মুখে উন্মোচন করেছিলেন মেনলে। সেই প্রথম বর্ণমালা আত্মপ্রকাশের ঘরের পাশে রাখা আছে পাথরে খোদাই করা ম্রো বর্ণমালা এবং নতুন নির্মিত বর্ণমালা ঘরের ভেতরেও সারি সারি ম্রো বর্ণমালা সাজানো আছে।ঘরের ভেতরে খোদাই করা একটি চেয়ার ও টেবিল আছে। টেবিলের ওপর কাঠের বইয়ে কয়েকটি হরফ খোদাই করা হয়েছে।

একসময় প্রকৃতি পূজারী ম্রোরা ছিলেন প্রকৃতির মতো সহজ-সরল। সরল জীবনের ম্রোদের বর্ণমালা ঘরটির আয়োজনও সরল প্রকৃতির মতোই সাজিয়ে রেখেছে।কিরওয়ান ম্রো বলেন, ম্রো বর্ণমালার ৩১টি হরফের মধ্যে ছয়টি স্বরবর্ণ। রোমান বর্ণমালার বড় ও ছোট হাতের বর্ণের মতো ম্রো বর্ণমালায়ও সাংলু, ইউকলুং ও মুক্লুং তিন ধরনের বর্ণের ধারার বিভাজন রয়েছে।

এর মধ্যে সাংলু বর্ণ দিয়ে সাধারণ লেখা, গান, কবিতা, ইতিহাস, সাহিত্য রচনা বা লেখা হয়। ইউকলুং বর্ণ দিয়ে ধর্ম বিষয়ক গ্রন্থ রচনা বা লেখা হয়। মুক্লুং বর্ণ দিয়ে ব্যক্তিগত ও অফিসিয়াল চিঠিপত্র লেখা হয়।

১৯৮২ সালের ডিসেম্বরের ভরা পূর্ণিমার দিনে ক্রামাদি পাড়ায় বর্ণমালা প্রকাশ করেছিলেন মেনলে ম্রো। এ জন্য ডিসেম্বরেই এই উৎসব পালন করা হয়। ধর্ম সম্মেলনের সঙ্গে ভাষা ও বর্ণমালা এবং ধর্মীয় প্রবর্তনের যোগসূত্র থাকায় একসঙ্গেই এই উৎসব পালিত হয়।

ক্রামাদি ধর্মের প্রধান পুরোহিত মাংইয়া ম্রো বলেন, ‘মেনলে ক্রামা ধর্মের ধর্মীয় বিধি-বিধান সংরক্ষণ ও বিকাশের জন্য ক্রামা বর্ণমালা উদ্ভাবন করেছিলেন। যা এখন ম্রো বর্ণমালা হয়েছে। এই বর্ণমালার উন্নয়ন ও ব্যবহারিক ক্ষেত্র বাড়াতে বর্ণমালা ঘর ভূমিকা রাখবে। এটি সামাজিক উদ্যোগ এবং ম্রো জনগোষ্ঠীর প্রত্যেকে সহযোগিতা করেছে।

ধর্ম সম্মেলনে ক্রামা ধর্মের প্রধান পুরোহিত ও শিষ্যরা। ছবি: সংগৃহিত

ম্রো বর্ণমালা উদ্ভাবন হয়েছিল বৃহস্পতিবার এবং মেনলে ম্রোর জন্ম, ধ্যান, ধর্ম প্রবর্তন ও গৃহত্যাগ রোববারে হয়েছিল। ফলে এই দুটি দিন ম্রোদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।বর্ণমালা ও ধর্মীয় গাম্ভীর্যকে ধরে রাখতে বৃহস্পতিবার ও রোববার সাপ্তাহিক ধর্মীয় উপাসনা দিবস তাদের কাছে। এই দিনগুলোতে সব ধরনের প্রাণী হত্যা থেকে বিরত থাকেন ক্রামা ধর্মাবলম্বীরা।

এই ধর্মে নারীদের জন্য আলাদা কোনো বিধান নেই। নারী ও পুরুষের সমান অধিকার। ম্রোদের মধ্যে প্রকৃতি পূজারী এবং বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী ছিলেন। ক্রামা ধর্ম প্রবর্তনের পর থেকে ৭০-৮০ শতাংশ ম্রো এখন এই ধর্মে দীক্ষা নিয়েছেন।

ক্রামা ধর্মীয় বিশ্বাসীরা লম্বা চুল রাখেন, মাথায় খোঁপা ও গলায় মালা পড়েন। নারীরা পায়ে খাড়ু, গলার মালা, কোমরে রোয়া কম বা বিছা পড়েন।
সংসার ত্যাগী, মাংসাশী নন, শীলবান বয়োজ্যেষ্ঠ একজন ব্যক্তিকে প্রধান পুরোহিত হিসেবে নির্বাচন করেন ক্রামা ধর্মের অনুসারীরা। ৩৯তম ধর্ম সম্মেলনে মাইন ইয়া ম্রোকে (৭০) প্রধান পুরোহিত নির্বাচন করা হয়েছিল।

প্রধান পুরোহিত বাংলাদেশ নিউজকে বলেন, ‘ধর্ম সম্মেলনে ক্রামা ধর্মীয় জ্ঞান, ধর্মীয় আচার-আচরণ, সামাজিক আচরণবিধি, বিধি নিষেধ এবং উপদেশমূলক কথা হয়েছে। এ ছাড়া, ম্রো ভাষায় সবাই যাতে পড়ার সুযোগ পায় সে ব্যবস্থা করা হবে।

ক্রামা ধর্মের বিধান অনুযায়ী প্রতিটি গ্রামে পাঁচ জন করে ধর্ম ও বর্ণমালা প্রচারকারী পুরোহিত বা ধর্মপুত্র থাকতে হবে। তারা ধর্মীয় রীতি-নীতি, আইন ও বিচার, প্রাকৃতিক ঔষধ ও মন্ত্র-তন্ত্র বা স্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা এবং ভাষা শিক্ষক—এই পাঁচটি দায়িত্ব পালন করবেন।প্রধান পুরোহিতের কাছ থেকে শপথ নিয়ে প্রতিটি পাড়ায় পাঁচ জন করে এই দায়িত্ব পালন করেন।

ক্রামা বর্ণমালা। এখানে রয়েছে স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ ও যুক্তবর্ণ। ছবি: সংগৃহীত

এবারের বার্ষিক ধর্ম সম্মেলনে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো নিজ নিজ এলাকায় প্রচার করা হবে এবং সেইসঙ্গে ম্রো সমাজে এগুলো রীতিনীতি হিসেবে প্রয়োগ করা হবে বলে জানান পাঁচটি বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধানরা।বয়োবৃদ্ধ ম্রোদের অনেকে ম্রো বর্ণমালা লিখতে ও পড়তে না পারলেও নতুন প্রজন্মের অনেকেই এই ভাষায় পারদর্শী। ধর্ম ও বর্ণমালা শিক্ষা ও প্রচারের জন্য রয়েছে কমিটি। এই ভাষা কমিটির উদ্যোগে এবং ব্যক্তি উদ্যোগের মাধ্যমে প্রতিটি এলাকায় ও গ্রামে ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।

ক্রামা ধর্মের নেতারা জানান, সরকার মারমা ও চাকমা ভাষায় পাশাপাশি ম্রো ভাষায়ও শিক্ষার উদ্যোগ নিলে বাংলার পাশাপাশি ম্রো ভাষা শিখতে পারবে ম্রো সম্প্রদায়ের প্রতিটি মানুষ।

ম্রো ভাষার লেখক ও গবেষক ইয়াঙান ম্রো বলেন, ‘ক্রামা অর্থ অসীম জ্ঞানের অধিকারী। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করা মেনলে ম্রো বিভিন্ন বিষয়ে গভীর জ্ঞান রাখতেন। তিনি লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে মাসের পর মাস ধ্যান করতেন বটগাছের নিচে। ক্রামাদি পাড়ায় থাকা অবস্থায় আরও কঠোর ধ্যান করার উদ্দেশ্যে ১৯৮৪ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সী মেনলে হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যান।

ধর্ম প্রচারক পুরোহিতরা জানান, তাদের বিশ্বাস একদিন আবার ফিরে আসবেন মেনলে ম্রো। তার নির্দেশনা পালনের মাধ্যমে তাদের জাতি একদিন সমৃদ্ধশালী এবং উচ্চ শিখরে পৌঁছাতে পারবে।
ভাষা প্রচারণায় প্রধান দায়িত্বে রয়েছেন সিংপাত ম্রো। তিনি বলেন, ‘ক্রামা ধর্ম প্রবর্তনের আগে পাহাড়ে জুমচাষ করে আসা এই ম্রো জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগ ছিলেন প্রকৃতি পূজারী। এর বাইরে কিছু বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন।

এ বছরের ধর্ম সম্মেলন ও থারকিম ঘর উদ্বোধনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক পাকো ম্রো জানান, ১৯৮২ সালে প্রবর্তিত এই নতুন ধর্ম ভাষা, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় ম্রো সমাজে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ম্রো নবীনতম এই ক্রামাদি ধর্মের অনুসারী এবং প্রায় ৮০ শতাংশ ম্রো এই বর্ণমালা লিখতে-পড়তে পারেন।

২০২১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী ম্রোদের জনসংখ্যা ৫১ হাজার ৪৪৮। তারা কেবলমাত্র বান্দরবান পার্বত্য জেলার সাতটি উপজেলায় বসবাস করেন।

Post Views: 195
Advertisement Banner
Previous Post

২০২৫ সালে যেসব নায়ক-নায়িকার সিনেমা আসছে

Next Post

থার্টি ফার্স্ট নাইট নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহর পোস্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক

Next Post
থার্টি ফার্স্ট নাইট নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহর পোস্ট

থার্টি ফার্স্ট নাইট নিয়ে শায়খ আহমাদুল্লাহর পোস্ট

Discussion about this post

Recent Posts

  • নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা
  • অসহায় রীমার পাশে সাংবাদিক কল্যাণ ফোরাম
  • জলপথের অভিভাবক: নৌ পুলিশের নিরলস অভিযানে নিরাপদ নদীপথ
  • এমপা’র উদ্যোগে মাসিক সাহিত্য সভা অনুষ্ঠিত
  • নির্বাচনে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে মোবাইল সিম কার্ডে নজরদারি করা করা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

Recent Comments

No comments to show.

প্রধান সম্পাদকঃ কাঞ্চন চৌধুরী সুমন
প্রধান উপদেষ্টাঃ সফি আলম চৌধুরী (সাগর)
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ রাকিব হোসেন মিলন
ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ দিপা আক্তার
আইন বিষয়ক সম্পাদকঃ এডভোকেট ফায়জানুল হক রিজন।
বার্তা সম্পাদকঃ মুহাম্মদ শেখ ফরিদ

মোবাইলঃ 01634559838
মোবাইলঃ 01944701754
Email:mrheng1971@gmail.com

২০২২. সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত।দৈনিক বাংলাদেশ নিউজ

Related Posts

নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা

নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা

by নিজস্ব প্রতিবেদক
November 9, 2025
0

  জেসমিন আক্তার রোদেলা স্টাফ রিপোর্টার নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আজ (শনিবার) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা ১০ মিনিট...

অসহায় রীমার পাশে সাংবাদিক কল্যাণ ফোরাম

অসহায় রীমার পাশে সাংবাদিক কল্যাণ ফোরাম

by নিজস্ব প্রতিবেদক
November 8, 2025
0

  নুরুন নাহার, নিজস্ব প্রতিবেদক সাংবাদিক কল্যাণ ফোরাম মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে অসুস্থ সাংবাদিক পরিবারের সদস্য রীমার পাশে দাঁড়িয়ে। এশিয়ান...

Facebook Twitter Youtube
No Result
View All Result
  • About
  • Advertise
  • Contact
  • Privacy & Policy
  • বাংলাদেশ
    • জাতীয়
  • বিশ্ব
    • মধ্যপ্রাচ্য
  • সারাদেশ
  • আইন-বিচার
  • অপরাধ চিএ
  • বাণিজ্য
    • শেয়ারবাজার
  • খেলা
    • ফুটবল
    • ক্রিকেট
    • অন্যান্য
  • বিনোদন
    • বলিউড
    • অন্যান্য
  • লাইফস্টাইল
    • ফ্যাশন
    • অন্যান্য
  • সাহিত্য
    • ইতিহাস-ঐতিহ্য
  • স্বাস্থ্য
    • স্বাস্থ্যসেবা
    • রোগ
      • গণঅভ্যুত্থান
      • অন্যান্য
  • অর্থনীতি
  • করোনাভাইরাস
  • কৃষি
  • চাকরি
  • দুর্ঘটনা ও অগ্নিকাণ্ড
  • ধর্ম
  • পড়া ও শোনা
  • প্রচ্ছদ
  • ভারত
  • মতামত
    • খাদ্য ও রেসিপি
  • রাজনীতি

© 2025 JNews - Premium WordPress news & magazine theme by Jegtheme.