
মোল্লা নাসির উদ্দীন
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) আয়োজিত এক অংশীজন সভায় বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকরা বলেছেন, নগরীর পরিবেশ রক্ষায় ভবন অনুমোদনের পূর্বেই সেপটিক ট্যাংক বা স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) বাধ্যতামূলক করতে হবে। এ ক্ষেত্রে রাজউক, ওয়াসা, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) ঢাকার র্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে রাজউক কর্তৃক নির্মিত ও নির্মাণাধীন ভবনসমূহে সেপটিক ট্যাংক ও এসটিপি স্থাপন সংক্রান্ত অংশীজন সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। সভায় সভাপতিত্ব করেন রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম।
সভায় কারিগরি সহায়তার প্রস্তাব উপস্থাপন করে ডাইকি এক্সিস বাংলাদেশ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) মো. গিয়াস উদ্দিন। ঢাকা নগরীর পানি দূষণ রোধে প্রযুক্তিগত দিক তুলে ধরেন ডাইকি এক্সিস বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুই ওয়াসে ও শফিকুল ইসলাম। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান।
‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় জাপানের মডেল অনুসরণ করা জরুরি’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন,
“জাপান যেভাবে তাদের নদী ও খালের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করেছে, তা অনুসরণ করে আমাদেরও করতে হবে। তবে এই প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। রাজউকের ইমারত নির্মাণ বিধিমালায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বাধ্যবাধকতা আনতে হবে এবং ওয়াসা ও অন্যান্য সংস্থাকে সমন্বিতভাবে সহায়তা করতে হবে।”
‘ভবন অনুমোদনে কঠোর বিধি-নিষেধ আনতে হবে’
বিশেষ অতিথি মোহাম্মদ এজাজ বলেন,
“ওয়াসা, ওয়াটার এইডকে সঙ্গে নিয়ে আমরা বড় আকারের WASH প্রোগ্রাম হাতে নেব। পাশাপাশি জনসচেতনতার জন্য একটি ব্যাপক ক্যাম্পেইন চালাতে হবে। ভবন অনুমোদনের আগে সেপটিক ট্যাংক বা স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং এর ব্যত্যয়ে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।”
‘হাতিরঝিলসহ নদী-খালে বর্জ্য যাওয়া বন্ধ করতে হবে’
সভাপতির বক্তব্যে রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন,
“ঢাকার বর্জ্য নদী-খাল ও বিশেষ করে হাতিরঝিলে গিয়ে পড়ছে, যা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে। তাই ভবন নির্মাণ অনুমোদনে সেপটিক ট্যাংক ও স্যুয়ারেজ ব্যবস্থার ওপর আরও গুরুত্ব দেওয়া হবে। ব্যত্যয় ঘটলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দাসেরকান্দি এসটিপি থেকে সমন্বিত পদক্ষেপের সূচনা করতে হবে।”
সভায় ডিএনসিসি, ওয়াসা, রিহ্যাব, ওয়াটার এইডসহ রাজউকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সার্বিকভাবে অংশীজনরা মনে করেন, ঢাকার ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ ও অব্যবস্থাপনার কারণে নগরীর পানি দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। তাই সেপটিক ট্যাংক ও এসটিপি স্থাপন বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি কার্যকর বাস্তবায়নই এখন সময়ের দাবি।





Discussion about this post