
কামরুল হাসান
কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধি
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কক্সবাজার জেলা কমিটির আয়োজনে কক্সবাজারে প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় করনীয় এবং সাংগঠনিক কর্মশালায় প্রধান অতিথি বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও পরিবেশবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, কক্সবাজারের ঐতিহ্যবাহী বাকঁখালী নদী দখল মুক্ত করতে কক্সবাজারের সকলকে এক যোগে আন্দোলনে নামতে হবে। দেশের অন্য জেলার চেয়ে কক্সবাজার ভৌগোলিক কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আসার পর থেকে যে পরিমাণ বন ও পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে তা সহজে অনুমেয় নয়।
১৪ সেপ্টেম্বর (শনিবার) কক্সবাজারের একটি অভিজাত হোটেলের হলরুমে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা কক্সবাজার জেলা কমিটির সভাপতি সাংবাদিক এইচ এম এরশাদের সভাপতিত্বে শহর বাপার সাধারণ সম্পাদক ইরফান উল হাসান।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম, স্বাগত বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি, স্থপতি ইকবাল হাবিব, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও কোষাধ্যক্ষ জাকির হোসেন, এইচ এম নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট আইনজীবী ও পরিবেশবিদ মোস্তফা কামাল চৌধুরী মুসা।
এতে বক্তারা বলেন, কক্সবাজারের পরিবেশ ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য বন, নদী, সমুদ্রের তীর ও লবনের মাঠ রক্ষা করা একান্ত প্রয়োজন। সীমান্তবর্তী হওয়ায় মানবপাচার ও মাদকও গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। কক্সবাজার প্রকৃতি ও পরিবেশের বিপর্যয় ঘটে রোহিঙ্গা আগমনে ফলে। এতে প্রথমে রান্নার জ্বালানি ও বাসস্থানের প্রয়োজনে শুধু মাত্র বনের কাঠ ও বনের গাছ ব্যবহার করা হয়। এতে উজাড় হয় হাজার হাজার একর বনভূমি। বনভূমিতেই গড়ে উঠে ১২ লক্ষ রোহিঙ্গাদের বসতঘর। এতে প্রায় ১০ হাজার একর বনভূমি উজাড় হয়। তাছাড়া সামরিক ক্যাম্প তৈরি করায় এতেও ১ হাজার একরের বেশি বনভূমি উজাড় হয়। এর পুরোটাই ছিলো গভীর বনভূমি ও হাতির আবাসস্থল ও বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য।
কক্সবাজারে পরিবেশ বিপর্যয়ের দ্বিতীয় কারণ হলো কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রথমে একই স্থানে ১৭ টি কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মানের চেষ্টা করা হয় কিন্তু পরিবেশ কর্মীদের আন্দোলনের মুখে ও আন্তর্জাতিক চাপে সেখান থেকে ফিরে আসে সরকার ২টি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রে নির্মাণ করা হয়।
যে জায়গায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয় তার পুরোটাই বাংলাদেশের একমাত্র স্বয়ং সম্পূর্ন লবণ মাঠ।
১৯৯৯ সালে সরকার কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের আশেপাশের এলাকাকে ইসিএ এলাকা ঘোষণা করে রাষ্ট্রপতি গেজেট আরি করে। ৩০০ মিটারের মধ্যে সকল ধরনের স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ করা হয়।
জনগণ আইন মানলেও সরকারি বিভিন্ন সংস্থা নিজের কার্যালয়, জেটি ও হোটেল নির্মাণ করে আইন লজ্জন করে। বাকঁখালী নদীর মোহনা ভরাট করে নির্মাণ করা হচ্ছে কক্সবাজার বিমানবন্দর। যা কক্সবাজারে পরিবেশ ও প্রকৃতিতে। মারাত্মক বিরোপ প্রভাব ফেলেছে। পরিবেশে দেখা দিয়েছে মারাত্মক বিপর্যয়। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাপা কক্সবাজার জেলা সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে পরিবেশ প্রকৃতি রক্ষায় কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।





Discussion about this post