
নিজস্ব প্রতিবেদক
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে এলাকাবাসীর সড়ক অবরোধের ঘটনা উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। স্থানীয় জনগণের অভিযোগ, ওসি সাইদুল ইসলাম মামলা ব্যবস্থায় পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন, যা এলাকায় অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে।
গত ১৯ ডিসেম্বর তারাগঞ্জের ৫নং সয়ার ইউনিয়নের শ্যামগঞ্জ বাজারে আলু ব্যবসায়ী মাহমুদুল হাসান এবং শরিফুল ইসলামের মধ্যে ব্যবসায়িক বিরোধে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামলাতে উভয়পক্ষ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সমঝোতার চেষ্টা করছিল। কিন্তু এর আগে শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত মাহমুদুল হাসান ও মিজানুর রহমানের উপর হামলা চালিয়ে নগদ ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা লুট করে বলে অভিযোগ ওঠে।
পরবর্তীতে, ২৮ ডিসেম্বর শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মাহমুদুল হাসানসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, ওসি সাইদুল ইসলাম সুষ্ঠু তদন্ত না করেই প্রভাবিত হয়ে মামলাটি রেকর্ড করেন এবং মাহমুদুল হাসানকে গ্রেপ্তার করেন।
ওসির এই কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে গত সোমবার সন্ধ্যায় তারাগঞ্জ পুরাতন চৌপুতিতে হাইওয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে চলা এই অবরোধে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরে তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল রানা এবং উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মাকদুম আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সুষ্ঠু বিচারের প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষুব্ধ জনতা অবরোধ তুলে নেয়।

অবরোধ প্রত্যাহারের ৪৮ ঘণ্টা পার হলেও ওসি সাইদুলের অপসারণ না হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, “ওসি সাইদুলকে অপসারণ না করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। আবারো সড়ক অবরোধ কিংবা আইনশৃঙ্খলার বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।”
এই বিষয়ে ওসি সাইদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপজেলা প্রশাসন এই বিষয়ে স্থানীয় জনগণের দাবি বিবেচনায় রাখার আশ্বাস দিয়েছে। তবে সমস্যার সমাধান না হলে তারাগঞ্জের পরিস্থিতি আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
তারাগঞ্জের এই ঘটনা স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থার সংকটকে সামনে নিয়ে এসেছে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা না হলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের অস্থিরতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।






Discussion about this post