
নিজস্ব প্রতিবেদক
লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদ ৮০ বছর পর ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি নিজেদের দাবি করে দখলের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ আলী রোডের বিপরীতে কালাচান বণিকের বাসার সামনে ঘটনাটি ঘটে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, নোটিশ করা ছাড়াই সকালে জেলা পরিষদ লোকজন নিয়ে তাদের দীর্ঘদিনের দখলীয় জমি দখলের চেষ্টা করে। বাধা দিলে দুপক্ষের মধ্যে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। ভুক্তভোগীরা আরও জানান, ১৯৪২ সালে নবদ্বীপ চন্দ্র নাথ নোয়াখালী ডিস্ট্রিক্ট বোর্ড থেকে সাবকবলা মূলে দাগ নম্বর ৪৩১৮, ১৯, ২০ খতিয়ান নম্বর ২৫৮৭ নকশায় ঞ চিহ্ন প্লটের ৭৬ শতাংশ ভূমি মালিক হন। নবদ্বীপের মৃত্যুর পর তার ওয়ারিশ ছেলে কৃষ্ণ পদ নাথ ও স্ত্রী সুশীলা সুন্দরী ওই জমির মালিক হয়ে ১৯৫৬ সালে মৃত হাজী আবদুল গফুর, মহেন্দ্র পাল, কৃষ্ণ কামিনী নাথ, অঞ্জলী দেবী, কিরণ বালা নাথ, লাল মোহন নাথের কাছে সবটুকু সম্পত্তি বিক্রি করে দেন। পর্যায়ক্রমে ক্রয় ও ওয়ারিশ সূত্রে এই জমির মালিক হন হাজী নুরুল ইসলাম, নাসির আহমেদ, স্বপন চন্দ্র নাথ, মৃত বিনোদ বিহারী পাল, হাসান মোল্লা ও মৃত ভুলু মিয়া। তারা দীর্ঘদিন ভোগদখলে থেকে নিয়মিত খাজনা পরিশোধ করে আসছেন এবং মালিকানাধীন জমি হিসেবেও তা রেকর্ডকৃত। জেলা পরিষদ ৮০ বছর পর রেকর্ড সংশোধন করে জেলা পরিষদের মালিকানায় জমিটি নেওয়ার আবেদন করেন। চলতি বছর ২২ জুন জেলা রেকর্ড অফিসে এই আবেদনের ওপর শুনানি হয়। যার কোনো আদেশ বা অনুলিপি এখনো প্রকাশ হয়নি। এমতাবস্থায় জেলা পরিষদ উক্ত জমি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল সকাল ৭টা থেকে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে জেলা পরিষদ জমি দখল নিতে যায়। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ বিতান্ডা সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। মালিকানা দাবি করা নাসির আহমেদ বলেন, ক্রয় সূত্রে এই জমির মালিকানা আমাদের। কিন্তু জেলা পরিষদ নোটিশ ছাড়াই আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় আমার দোকান ঘর ভেঙে নিয়ে যায়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। স্বপন চন্দ্র নাথ বলেন, ৮০ বছর যাবৎ এ জমি আমরা ভোগ দখল করে আসছি। আমাদের সকল খাজনাও সম্পূর্ণ পরিশোধ রয়েছে। আমাদের নামে রেকর্ডও আছে। তার পরও দলীয় লোকজন এনে জোরপূর্বক জেলা পরিষদ আমাদের জমি দখলে নিতে চায়। এ সময় আমরা বাধা দেই।
জেলা পরিষদের প্রশাসক আলহাজ মো. শাহজাহান বলেন, জেলা পষিদের জায়গা দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত ছিল। আমরা তা দখল করছি। যদি কেউ মালিকানা দাবি করে তাহলে যথাযথ কাগজপত্র নিয়ে আসুক, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখব। তবে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের আমরা পাঠাইনি। যদি কেউ স্বেচ্ছায় গিয়ে থাকে, তা আমাদের জানা নেই।
লক্ষ্মীপুর শহর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো. কাউসার বলেন, জমি নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধের কথা শুনে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।





Discussion about this post