
চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরে বেড়িবাঁধের ভূমি অধিগ্রহণের টাকা আত্মসাতের জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলরের ভুয়া প্যাড, সিল ও নমুনা সই ব্যবহার করে জাল ওয়ারিশ সনদ তৈরি করার অভিযোগে আদালতে মামলা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী বাদী হয়ে এটি করেন।
আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালতে মামলাটি করা হয়।
বাদীর আইনজীবী মোস্তফা মোহাম্মদ এমরান প্রথম আলোকে বলেন, আদালত শুনানি শেষে অভিযোগটি গ্রহণ করেছেন। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্ত করে ২০ এপ্রিলের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আসামিরা হলেন চট্টগ্রাম নগরের বন্দর থানার মধ্য হালিশহরের আবদুল গণি কন্ট্রাক্টর বাড়ির মো. আবুল হাসেম, ডেইজী আকতার, কোহিনুর আকতার, হোসেন শরীফ, মো. আমিন শরীফ, আলতাজ বেগম, নুর বেগম, রেজিয়া বেগম, কামরুন নাহার মনু ও গোলনাহার বেগম।
বিজ্ঞাপন
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি আবুল হাসেম গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর দুপুরে ১৪ নভেম্বর ইস্যু করা কাউন্সিলর স্বাক্ষরিত দুটি ওয়ারিশ সনদপত্রের ফটোকপি সত্যায়িত করতে আসেন। মৃত জনাব আলী ও মৃত মোহাম্মদ শরীফের ওয়ারিশের নাম উল্লিখিত দুটি ওয়ারিশ সনদের ফটোকপি কাউন্সিলরের সামনে উপস্থাপন করলে কাউন্সিলর আসামি হাসেমকে ওয়ারিশ সনদের স্বাক্ষর তাঁর নয় বলে চ্যালেঞ্জ করেন। কিন্তু হাসেমও পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলে কাউন্সিলর ওয়ারিশ সনদের বালাম বই পরীক্ষা করেন। বালাম বইয়ে দেখা যায়, গত বছরের নভেম্বর মাসে কোনো ওয়ারিশ সনদই ইস্যু করা হয়নি। এক পর্যায়ের হাসেম স্বীকার করেন, আসামিরা ওই ওয়ারিশ সনদ দুটি ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের প্যাড, সিল ও স্বাক্ষর নকল করে তৈরি করেছে। বেড়িবাঁধের ভূমি অধিগ্রহণের সরকারি টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে সনদ দুটি তৈরি করার কথাও স্বীকার করেন আসামিরা। ওই দিনই জাল মূল সনদ দুটি কাউন্সিলরের অফিসে জমা দিয়ে তা নষ্ট করার কথা থাকলেও হাসেম তা জমা দেননি। এ ঘটনায় পরদিন ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিসের সচিব নগরীর বন্দর থানায় এ ব্যাপারে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। বাদী ১৯ ডিসেম্বর বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা প্রশাসক দপ্তরে জানান। বাদী পরে জানতে পারেন, নগরীর চকবাজার, বায়েজিদ, প্রি-পোর্ট, মুরাদপুরসহ নগরের বিভিন্ন এলাকায় জাল ওয়ারিশ সনদ তৈরির সংঘবদ্ধ চক্র রয়েছে। আসামিরা বাদীর দপ্তরের প্যাড, সিল ও স্বাক্ষর নকল করে আরও জাল ওয়ারিশ সনদ তৈরি করে বেড়িবাঁধের ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারি ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করছেন।





Discussion about this post